নবীন প্রবীণ এক প্রাণ’

‘যশোর জিলা স্কুল’ একটি নক্ষত্রের নাম। জ্ঞানের আলো বিলিয়ে চলা এই নক্ষত্রের উজ্জ্বল দ্যুতিকে ধারণ করে উদ্ভাসিত অগণিত শিক্ষার্থী দীপ্ত পদচারণায় মুখর করেছে নানা অঙ্গণ। শিক্ষা, সাহিত্য, সমাজসেবা, রাজনীতি, সাংবাদিকতা ছাড়াও জ্ঞান বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় অবদান রেখে চলেছে ইতিহাসখ্যাত এ স্কুলের হাজারো গুণী সন্তান। এমনই এক রত্নগর্ভা প্রতিষ্ঠানে শৈশব, কৈশোরের সোনালী দিনগুলো অতিবাহিত করতে পারায় আমরা গর্বিত—ধন্য। 

স্কুল আঙিনায় সবুজ প্রান্তরে শ্বেতবসনে আমরা ছিলাম দেবশিশুর মত প্রাণোচ্ছ্বল। ক্লাসের আগে, ছুটির ঘণ্টায় আর টিফিনে ছিল দুরন্ত কলবর আর সজীব উচ্ছ্বাসের নির্মল বিনোদন। আবার অ্যাসেম্বিলি, শ্রেণিকক্ষে ছিল সুশৃঙ্খল প্রাণবন্ত জ্ঞানার্জন। পাশাপাশি সহ শিক্ষা কার্যক্রমে সাধারণ জ্ঞান চর্চা, বিতর্ক, আবৃত্তি, সঙ্গীত আর নানা খেলাধুলায় ছিল সরব উপস্থিতি, ছিল সৃষ্টিশীল মেধাবিকাশের নানান প্রয়াস। এসব কিছুর সাথেই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি ছিল শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষকদের কঠিন কোমল উপস্থিতি। শাসনে সোহাগে তাঁরা জীবন চলার জন্য যে পথের সূচনা করে দিয়েছেন, সে পথে আজও আমরা পথিক। তাঁদের পায়ের ধুলো মাথায় নিয়ে হেঁটে চলেছি দিগন্ত বিস্তৃত বিশ্ব চরাচর। ইতিহাসের সাক্ষি উপমহাদেশের পঞ্চম ও বাংলাদেশ ভূখণ্ডের দ্বিতীয় প্রাচীনতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যশোর জিলা স্কুল। যশোর রাণী রাজা আর কয়েকজন বিদ্যানুরাগী ব্যক্তি মিলে ১৮৩৮ সালের ৩ ফেব্র“য়ারি স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।   ঐতিহ্যবাহী প্রাচীনতম এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সময়ের দাবি ছিল একটি প্রাক্তন ছাত্র সমিতি। সময়ের সেই দাবির বাস্তবায়নের লক্ষে ২০০৫ সালের ৩ ফেব্র“য়ারি জেলা স্কুলের প্রাক্তন ছাত্রদের সমন্বয়ে একটি অরাজনৈতিক ও অলাভজনক যশোর জিলা স্কুল প্রাক্তন ছাত্র সমিতি গঠন করা হয়।  যশোর জিলা স্কুল প্রাক্তন ছাত্র সমিতি প্রতিষ্ঠার পর থেকে ছাত্র বৃত্তি প্রদান ও সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে যাচ্ছে 

শিক্ষার নাড়ি পেঁাতা এ স্কুল নিয়ে এই স্মৃতিকাতরতা বোধ করি যশোর জিলা স্কুলের সব সন্তানের। আর আমাদের প্রাণের এই স্কুল ইতোমধ্যে পার করেছে পৌনে দু’শতক। ‘নবীন প্রবীণ এক প্রাণ’ এই চেতনায় বলীয়ান হয়ে সকলের পথচলা হোক সত্য, সুন্দর, দেশ, জাতি ও মানবতার কল্যাণে।